সুযোগ হাতছাড়ার অনলে পুড়ল বেলজিয়াম

একটা নয়, দুইটা নয়, অন্তত চারটি গোলের সহজতম সুযোগ পেয়েছিল বেলজিয়াম। একটু এদিক সেদিক হলেই ক্রোয়েশিয়ার জালে গোল উৎসব করতে পারত রাশিয়া বিশ্বকাপের তৃতীয় হওয়া দলটি।
কিন্তু ফুটবল বিধাতা এদিন তাদের দিকে মুখ তুলেও তাকাননি। স্রষ্টাকে পাশে পাননি বলেই হয়তো একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করেও স্কোরশিটে কোনো গোল জমা হয়নি। তাতেই সর্বনাশ।
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করতে আজ রাশিয়া বিশ্বকাপের রানার্সআপদের বিপক্ষে জয় পেতেই হতো বেলজিয়ামকে। কিন্তু সুযোগ হাতছাড়ার অনলে পুড়ে বেলজিয়াম ড্রয়ে পুড়ে ছারখার। পয়েন্ট ভাগাভাগি করেও মেলেনি দ্বিতীয় পর্বে যাওয়ার সুযোগ।
গোলশূন্য ড্রয়ে এক পয়েন্ট পেয়ে ক্রোয়েশিয়া রানার্সআপ হয়ে উঠে গেছে দ্বিতীয় রাউন্ডে। চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোতে নাম লিখিয়েছে মরক্কো।
দুই ইউরোপীয়ান জায়ান্ট বেলজিয়াম ও ক্রোয়েশিয়া প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ মঞ্চে মুখোমুখি। তাদের লড়াই উত্তাপ ছড়াবে তা আগের থেকেই জানা ছিল। তবে বেলজিয়ামের জন্য ম্যাচটা ডু অর ডাই হওয়ায় আলাদা গুরুত্ব পায়। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক দুই দল।
গোল পেতে মরিয়া হয়ে খেলে দুই দলই। প্রথমার্ধের ১৭ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। ডি বক্সের ভেতরে ক্রামাচিচকে ফেলে দেওয়ায় পেনাল্টি পায় ক্রোয়েশিয়া। রেফারি পেনাল্টি দিলেও ভিএআরের সহায়তায় তা বাতিল হয়। স্পটকিক নেওয়ার সময় ক্রোশিয়ার ফরোয়ার্ড অফসাইডে থাকায় পেনাল্টি বাতিল করা হয়। মড্রিচ রেফারির ওপর ক্ষোভ ঝারলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। বেলজিয়াম থেমে থাকেনি।
কেভিন ডি ব্রুইনারা প্রথমার্ধের বিরতিতে যাওয়ার আগে মুহুমুর্হু আক্রমণে বেলজিয়ামের রক্ষণ কাঁপিয়ে তোলেন। কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল হয়নি। বিরতির ঠিক পরই মাঠে নামেন রোমেরু লুকাকু। তাকে পেয়ে মনে হয়েছিল বেলজিয়ামের ফিনিশিংয়ের অভাব পূরণ হবে। কিন্তু দিনটা আজ তার ছিল না।
তার নেওয়া শট একবার গোলপোষ্ট লেগে ফিরে আসে। আরেকবার পোষ্টের খুব কাছ থেকে তার নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। সবশেষ তার গা ছুঁয়ে যাওয়া বল সরাসরি পেয়ে যান গোলরক্ষক। ম্যাচের অন্তিত মুহুর্তে লুকাকু আরেকটি সুযোগ তৈরি করেছিলেন। ছয় গজ দূর থেকে যেই শট নেবেন তখন বল ক্লিয়ার করেন গাভারদিওল।
বেলজিয়ামের সুযোগ হাতছাড়ার দুঃস্মৃতির রাতে নায়ক হয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার গোল রক্ষক ডোমিনিক দিভালোকিভিচ। প্রতিপক্ষের তিনটি শট বাঁচিয়ে দিভালোকিভিচ দলকে এক পয়েন্ট পাইয়ে তুলেছেন শেষ ষোলোতে।
গোল না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বেলজিয়ামকে। যে আক্ষেপ আসলে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে যাওয়ার। লুকাকু, ডি ব্রুইনা, হাজার্ড ও কর্তোয়াদের এই দলকে বলা হচ্ছিল বেলজিয়ামের সোনালী প্রজন্ম। যারা বিশ্বকাপ জেতাতে পারে বলেও বিশ্বাস ছিল সবার। কিন্তু গ্রুপ পর্বেই শেষ তাদের যাত্রা। শেষবার এমনটা হয়েছে ১৯৯৮ সালে, ২৪ বছর আগে।