শেষ পর্যন্ত ৪-১ গোলে জয় পেলে ব্রাজিল। প্রথমার্ধে ৪ গোলে এগিয়ে থাকা ব্রাজিল দ্বিতীয়ার্ধে একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও গোল পায়নি। তাতে সমস্যা হয়নি। কোরিয়া উল্টো পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে। এক গোল শোধ দিয়েছে। সহজতম জয়ে ব্রাজিল প্রি কোয়ার্টার পেরিয়ে গেছে। কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া।
পেলেকে জয় উৎসর্গ। ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছেন ব্রাজিলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ জেতা পেলে
গোল শোধ কোরিয়ার
৭৬ মিনিটে প্রথম গোল পেল কোরিয়া। ফ্রি কিক থেকে বল ফিরে পাওয়ার পর পাইক সিনওগোহ দূরপাল্লার শটে অ্যালিসন বেকারকে বাকরুদ্ধ করে দেন। ভলিতে বল নামিয়ে বাঁ পায়ের জোড়ালো শটে রক্ষণ ভাঙেন সিনওগোহ। বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা গোল হিসেবে এটা বিবেচিত হবে। কোরিয়ার সমর্থকরা এই গোলের পর উল্লাস করেছে। ব্রাজিলের সমর্থকরাও হাতে তালি দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ব্রাজিলের গোল উৎসবে দিশেহারা কোরিয়া
প্রথমার্ধে চার গোল করা ব্রাজিল দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। তবে এখনও খুঁজে পায়নি জাল। বিশেষ করে রাফিনিয়া গোলের দুটি সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু কোরিয়ার গোল রক্ষক কিম সিং গুই তার দুটি শটই আটকে দেন।
ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী চার খেলোয়াড় গ্যালারিতে। ডানপাশ থেকে রিভালদো, রবার্তো কার্লোস, কাফু ও রোনালদো
নেইমার কীর্তি
ব্রাজিলের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের তিন ভিন্ন আসরে গোল করার অনন্য কীর্তি গড়েছেন নেইমার। এর আগে এই রেকর্ড গড়েছিলেন রোনালদো ও পেলে। নেইমার ২০১৪ এবং ২০১৮ বিশ্বকাপে দলের হয়ে গোল করেছিলেন। ২০১০ সালে কোনো গোল পাননি। ২০১৪ সালে চারটি ও ২০১৮ সালে দুই গোল করেছিলেন। চলতি বিশ্বকাপের প্রথম গোল পেয়েছেন আজ। পাশাপাশি আজকের গোল দিয়ে কিংবদন্তি পেলের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন নেইমার। ব্রাজিলের জার্সিতে পেলে ৭৭ গোল করেছিলেন। নেইমার আজ পেয়েছেন ৭৬তম গোল।
৬৮ বছর পর…
প্রথমার্ধে ৪-০ গোলে এগিয়ে ব্রাজিল। শেষ ব্রাজিল এমন শুরু পেয়েছিল ১৯৫৪ সালে। ফিফা বিশ্বকাপের ম্যাচে সেবার মেক্সিকোর বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে ৪-০ গোলে এগিয়ে ছিল ব্রাজিল।
থামানোই যাচ্ছে না ব্রাজিলকে
কোরিয়ার জালে চতুর্থ গোল করলেন লুকাস পাকুয়েটা। কাউন্টার অ্যাটাকে দারুণ ফুটবলে কোরিয়ার জালে চতুর্থ গোল করতে একটুও বেগ পেতে হয়নি ব্রাজিলকে। ভিনিসিয়াসের ক্রস থেকে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ডানপায়ে জোড়ালে শটে রক্ষণ ভাঙেন পাকুয়েটা।
মুগ্ধতা ছড়িয়ে রিচার্লিসনের গোল
অডাসিয়াস ড্রিবলিং, ওয়ান টু ওয়ান পাস, ফাস্ট মুভমেন্ট এন্ড প্লেসিং গোল! ব্রাজিল অ্যাট ইটস বেষ্ট। ধারাভাষ্যকার রিচার্লিসনের গোলের বর্ণনা করছিলেন এভাবেই। সঙ্গে যোগ করেছেন, ব্রাজিলের নাম্বার নাইন জার্সির ওজন আছে। সেই ভরসা আজ রিচার্লিসন দেখালেন।
ডি বক্সের বাইরে ওয়ান টু ওয়ানে কোরিয়ার খেলোয়াড়ের সঙ্গে হেডে ড্রিবলিং করে বল জিতে মার্কুইনহসকে পাস দিয়ে ভেতরে ঢুকেন রিচার্লিসন। মার্কুনইহস বল দেন থিয়াগো সিলভাকে। ব্রাজিলের অধিনায়ক দারুণ এক পাসে ডি বক্সের ভেতরে রিচার্লিসনকে আবার বল এগিয়ে দেন। এক পায়ে বল রিসিভ করে আরেক পায়ে ফরোয়ার্ডের দারুণ গোল। সাম্বার ছন্দময় ফুটবল বলতে যা বুঝাই সেই ঐতিহ্য ফুটে উঠেছিল এই গোলে।
২৯ মিনিটে ব্রাজিল ৩-০ গোলে এগিয়ে।
মাঠে ফিরেই নেইমারের গোল
ডি বক্সের ভেতরে রিচার্লিসনকে ফাউল করায় পেনাল্টি পেল ব্রাজিল। বল দখলের লড়াইয়ে রিচার্লিসন আগে বলে স্পর্শ করায় ফাউল পায় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা নেইমার পেনাল্টি শট নেন। সফল স্পটকিকে অতি সহজেই দলকে দ্বিতীয় গোলের স্বাদ দিলেন এই সুপারস্টার। ম্যাচের ১৩ মিনিটে ব্রাজিল ২-০ গোলে এগিয়ে।
ভিনিসিয়াসের গোলে শুরুতেই এগিয়ে ব্রাজিল
ঠান্ডা মাথায় দারুণ ফিনিশিংয়ে দলকে এগিয়ে নিলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। ম্যাচের সপ্তম মিনিটে রাফিনিয়ার দুর্দান্ত পাস থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে সহজেই বল জালে জড়ান ভিনিসিয়াস।
ডানপ্রান্ত থেকে রাফিনিয়া কোরিয়ার দুই খেলোয়াড়কে ফাঁকি দিয়ে বল নিয়ে ভেতরে ঢুকেন। কিন্তু বেশিক্ষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। ভুল পাসে আবার নিজের নাগালেই বল পেয়ে যান। সেখান থেকে দারুণ ক্রস করেন ডি বক্সের ভেতরে। তখন বক্সের ভেতরে নেইমার, রিচার্লিচন থাকলেও তারা বলের নাগাল পাননি। অপরপ্রান্তে থাকা ভিনিসিয়াস বল রিসিভ করে থিতু হয়ে হাওয়ায় ভাসিয়ে বল জালে পাঠান।
এরপর শুরু হয় ব্রাজিলের উদযাপন। গোল হয়ে গোটা দল চেনা সাম্বা নাচে প্রথম গোলের উদযাপন করেন। কিন্তু আমুদে নেইমারের উদযাপন বাকি ছিল। তাইতো গোল করা ভিনিসিয়াস, রাফিনিয়া ও লুকাস পাকুয়েটাকে নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে কোমর দোলান আরো কিছুক্ষণ।
নেইমারকে নিয়ে কোরিয়ার বিপক্ষে শেষ আটে ওঠার লড়াইয়ে ব্রাজিল
দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর ম্যাচে মাঠে নেমেছে ব্রাজিল। এই প্রথমবারের মতো ব্রাজিল এশিয়ার কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলছে নকআউট পর্বে। স্বস্তির খবর, এই ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরেছেন ব্রাজিলের সুপারস্টার নেইমার জুনিয়র। স্টেডিয়াম ৯৭৪ এ রাউন্ড অব সিক্সটিনে দুই দলের ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত একটায় শুরু হয়েছে।
রোড টু প্রি কোয়ার্টার
হট ফেভারিট হিসেবেই কাতার বিশ্বকাপের মিশন শুরু করেছিল ব্রাজিল। সার্বিয়ার পর সুইজাল্যান্ডকে হারিয়ে এক ম্যাচ আগেই গ্রুপ পর্বের বাধা অতিক্রম করে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের কাছে হেরে যায় তিতের দল। নেইমারবিহীন ব্রাজিল ক্যামেরুনের বিপক্ষে ছিল নিজেদের ছায়া হয়ে। মূল ব্রাজিল দলকে সেই ম্যাচে খুঁজে পাননি ভক্তরা। অবশ্য কোচ তিতে রিজার্ভ বেঞ্চ পরীক্ষা করার সাহস দেখিয়েছিলেন সেই ম্যাচে।
দক্ষিণ কোরিয়া গ্রুপ পর্বে ভালো ফুটবল খেলেই উঠেছে পরের রাউন্ডে। উরুগুয়ের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ের পর, ঘানার বিপক্ষে ৩-২ গোলে ম্যাচ হার। শেষ ম্যাচে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ পর্তুগালের বিপক্ষে পূর্ণ তিন পয়েন্ট তুলে নিয়েছিল এশিয়ার দেশটি। ২-১ গোলে জিতে বাজিমাত তাদের। তাই তাদের সামর্থ্য নিয়ে কোন শঙ্কা বা সন্দেহ নেই। শেষ ষোলোর ম্যাচে উজ্জীবিত কোরিয়ার বিপক্ষে তাই ব্রাজিলের দিতে হবে বড় পরীক্ষাই।
হেড টু হেড
বিশ্বকাপে এবারই প্রথম একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া-ব্রাজিল। তবে বিশ্বকাপ ছাড়া একে অপরের বিপক্ষে খেলার বেশ ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের। এখন পর্যন্ত সাতবার একে অন্যের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে ব্রাজিল ও দক্ষিণ কোরিয়া। এই সময়ে ব্রাজিলের জয় ৬ ম্যাচে। আর এশিয়ান দলটির জয় একটি।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com
@Earthtimes24.com